২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে ভেন্যু নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি চাইলে আয়োজক শহরগুলোকে 'অনিরাপদ' ঘোষণা করে সেখান থেকে ম্যাচের স্থান পরিবর্তন করতে পারেন। তবে ফিফা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, টুর্নামেন্টের ভেন্যু নির্ধারণের সম্পূর্ণ ক্ষমতা একমাত্র তাদেরই, কোনো রাষ্ট্র বা সরকারের নয়।
ফিফা ২০২২ সালেই যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা—এই তিনটি দেশে আয়োজিতব্য বিশ্বকাপের ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে। এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি, মেক্সিকোর তিনটি এবং কানাডার দুটি শহর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং সান ফ্রান্সিসকোর কাছাকাছি অবস্থিত ন্যাশনাল ফুটবল লীগ (এনএফএল) স্টেডিয়ামও রয়েছে।
লন্ডনে একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে ফিফার সহসভাপতি ও কনকাক্যাফ সভাপতি ভিক্টর মন্টাগলিয়ান স্পষ্ট করেন, "এটি ফিফার টুর্নামেন্ট, সিদ্ধান্তও নেবে ফিফাই।" তিনি মনে করেন, ফুটবল খেলাটি রাজনীতি এবং নেতাদের সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে টিকে থাকবে। মন্টাগলিয়ান আরও যোগ করেন, "এ খেলাই আমাদের সৌন্দর্য, এটি কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের চেয়েও বড়।"
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যেসব শহর তার অভিবাসন ও অপরাধবিরোধী নীতির বিরোধিতা করবে, সেসব স্থান থেকে বিশ্বকাপ ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, "আমি যদি মনে করি কোনো ভেন্যু অনিরাপদ, তাহলে তা বাদ দেওয়া হবে।" শুধু বিশ্বকাপ নয়, ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক নিয়েও একই ধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার একটি দাবিও উত্থাপিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ফিফার সহসভাপতি মন্টাগলিয়ান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা (UEFA)-এর, ফিফার নয়। আগামী সপ্তাহে জুরিখে ফিফা কাউন্সিলের বৈঠকেও এই বিষয়টি আলোচনার জন্য রাখা হবে না।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান সংঘাতের কারণে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বহিষ্কার করার জন্য জাতিসংঘভুক্ত আটজন বিশেষজ্ঞ ফিফা ও উয়েফার কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, বিশ্বকাপে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার যেকোনো উদ্যোগ তারা প্রতিহত করবে।