নিষেধাজ্ঞা ও হুমকির মুখে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দেশের অগ্রগতিতে বিশ্বাস এবং জনগণের ওপর ভরসা রাখা জরুরি। প্রেসিডেন্ট আরও উল্লেখ করেন যে হত্যাকাণ্ড এবং সামরিক চাপ প্রয়োগ করে ইরানকে নতজানু করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) হরমোজগান প্রদেশের বান্দার আব্বাসে বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সাথে এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের মর্যাদা, লক্ষ্য ও গর্বকে ভুলে যাওয়া চলবে না। আমাদের এক কাতারে, এক কিবলার দিকে এবং এক নেতৃত্বের অধীনে এগোতে হবে। জামাতে নামাজের এটাই তাৎপর্য। যদি ঐক্য না থাকে, তাহলে সেই জামাত একটি খালি খোলস মাত্র।’
পেজেশকিয়ান আরও বলেন, ‘শত্রুরা ভাবে, হত্যাকাণ্ড চালিয়ে তারা আমাদের জাতিকে নতজানু করতে পারবে। কিন্তু হাজার হাজার আরও যোগ্য মানুষ এই পতাকা বহনের জন্য প্রস্তুত।’
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বহু বছর ধরে ইরানবিরোধী হত্যা অভিযান পরিচালনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং তাদের সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ইঙ্গিত করেন। সম্প্রতি ২০২৫ সালের জুন মাসে ইরানের সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের অযৌক্তিক আগ্রাসনে শত শত বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি এই কথা বলেন।
শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অবৈধ নিষেধাজ্ঞাগুলো জাতির পথ রুদ্ধ করতে পারবে না বলেও প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পায়, তারা বিশ্বাস করে না যে আল্লাহ ও জনগণের ওপর নির্ভর করে এই পথ অব্যাহত রাখা যায়।’
প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সম্প্রতি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির আওতায় প্রত্যাহার করা নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় কার্যকর করেছে। 'স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম' নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়ায় চুক্তির তিনটি ইউরোপীয় পক্ষ (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি) ইরানকে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে এই পদক্ষেপ নেয়। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের বিদেশি সম্পদ জব্দ হবে, অস্ত্রচুক্তি স্থগিত হবে এবং দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি লক্ষ্যবস্তু হবে।