সুইডেনের পরিবেশকর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গ্রেটা থুনবার্গসহ 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'-এর ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে ইসরায়েল গ্রিসে ফেরত পাঠাচ্ছে। ইসরায়েলের টেলিভিশন সংবাদমাধ্যম আই ২৪ নিউজের এক প্রতিবেদনে শনিবার এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রিসের যতজন নাগরিক ফ্লোটিলা অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের এবং গ্রেটাসহ মোট ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে একটি বিশেষ উড়োজাহাজে করে গ্রিসে পাঠানো হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে গাজার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের অন্তর্ভুক্ত ৪৩টি নৌযান।
এই মিশনের মূল উদ্যোক্তা ছিল ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি), যা চারটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জোট: ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা।
এই অভিযানে সুইডেনের নাগরিক গ্রেটা থুনবার্গ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক অংশ নেন। অভিযাত্রীদের মধ্যে ছিলেন পার্লামেন্ট সদস্য, আইনজীবী, রাজনৈতিক কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবীরা।
গত বুধবার রাতে ইসরায়েলের নৌবাহিনী প্রথমে ১৩টি নৌযান আটক করে। এরপরও বাকি ৩০টি নৌযান গাজার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এই ৩০টি জাহাজের মধ্যে পোল্যান্ডের ‘ম্যারিনেত্তি’ নৌযানটি ছিল সবচেয়ে এগিয়ে।
পরবর্তী দিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একে একে বাকি সব নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌ সেনারা। আটক হওয়া নৌযান ও অভিযাত্রীদের ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে রাখা হয়েছিল। আটক অভিযাত্রীদের মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন।
আই ২৪-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আটক অভিযাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আটক অবস্থায় গ্রেটাকে সুইডেনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়েছিল। কর্মকর্তাদের কাছে তিনি অভিযোগ করেছেন যে তাকে ছারপোকায় পরিপূর্ণ একটি কারকক্ষে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি দেওয়া হয়নি।
এছাড়াও, তিনি অভিযোগ করেন যে তাকে জোর করে ইসরায়েলি পতাকাকে চুমু দেওয়া এবং পতাকা ধরে ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়েছে।
অভিযাত্রী দলের আরেক সদস্য, ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো ডি’ আগুস্টিনো, গার্ডিয়ানকে বলেছেন: “আমাদের সবার সামনেই গ্রেটাকে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে, ইসরায়েলের পতাকাকে চুমু খেতে এবং পতাকা গায়ে জড়িয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।”