বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য দেশে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং তাঁর দল নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) প্রকাশিত ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। এটি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া তারেক রহমানের প্রথম সরাসরি ইংরেজি সাক্ষাৎকার।
সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান বলেন, "আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা জিতব। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা একাই সরকার গঠনের অবস্থানে আছি।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তাঁর বাংলাদেশে ফেরার সময় খুব কাছে।
তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিএনপি দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। তাঁর মতে, দেশে একটি 'অবাধ ও গ্রহণযোগ্য' নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পূর্ণতা পাবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধানে থাকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করার পর, ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে তারেক রহমান আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন।
ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে তারেক রহমান আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জানান, বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিশেষত গত বছরের ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে সরকার গঠনে প্রস্তুত। এই নতুন গোষ্ঠী সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমরা তাদের রাজনীতিতে স্বাগত জানাব। তারা তরুণ, তাদের ভবিষ্যৎ আছে।"
তারেক রহমান বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কিছু দিক তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শুধু পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভর না করে আমাজন, ই-বে ও আলিবাবার মতো অনলাইন খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহকেন্দ্র হতে পারে।
নির্বাচনে জয়ী হলে বিদেশে পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারে ড. ইউনূস সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কথাও জানিয়েছেন তারেক রহমান।
আওয়ামী লীগকে ভবিষ্যতে আবার রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, এ বিষয়ে তারেক রহমান সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি প্রশ্ন তোলেন, "যদি তারা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে?"
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পরবর্তী সরকার যেই গঠন করুক না কেন, তাদের দুর্বল অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত এবং প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মতো চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে হবে।