আজ ২৩ আগস্ট শনিবার বিকাল ৪টায় সাগর-রুনি মিলনায়তন, রিপোটার্স ইউনিট, সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ উদ্যোগে ‘ঠিকাদারী প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের এক বছর ও পূর্ণাঙ্গ দাবি আদায়ের পরর্তি কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষ্য’ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আউটসোর্সিং কর্মচারিদের দুর্দশা তুলে ধরে শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, চাকরিতে কোটা প্রথার বৈষম্যের চেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার হলো, চাকরি টিকে থাকার অনিশ্চয়তা। দশ-পনের বছর চাকরি করেও এই অনিশ্চয়তায় দিন কাটাতে হচ্ছে অনেক মানুষকে। এই অনিশ্চয়তার সাথে আবার তাদেরকে নিতে হচ্ছে সরকারকে সেবা দেওয়া ও ঠিকাদারকে মুনাফা দেওয়ার চাপ।
তিনি আরও বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল সব জায়গাতে লোক নিয়োগের কাজ করছে ঠিকাদারদের সিন্ডিকেট। জনগণ যেখানে সরাসরি সেবা নেয় সেখানে জনবল নিয়োগে এই ধরনের সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, শ্রম আইন অনুসারে প্রত্যেক শ্রমিকের নিয়োগপত্র, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, ওভারটাইম, সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, উৎসব ভাতা ইত্যাদি অধিকার আছে। কিন্তু আউটসোর্সিং কর্মচারীরা সরকারি অফিসে কাজ করেও এই অধিকারগুলো পান না। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের কাজ ন্যায়বিচার দেওয়া। রাষ্ট্র যদি নিজেই আইন ভঙ্গ করতে থাকে তাহলে তার নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে যায়।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আউটসোর্সিং কর্মচারীদের দাবিগুলো ন্যায্য বলেই প্রধান উপদেষ্টা এগুলো মেনে নেওয়া হবে বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু এখনও তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, শ্রমিকের অধিকার পূরণ না করে বাংলাদেশ নতুন যাত্রা করতে পারবে না
বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল হক নুর দুংখ প্রকাশ করে বলেন বারবার চিঠি দেয়ার পরেও সরকার প্রধানের সাথে দাবী বিষয়ে আলোচনা বসার সুযোগ হয়নি সেজন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা দায়ী। সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণে আজকে লক্ষ লক্ষ আউটসোর্সিং/দৈনিকভিত্তিক মজুরি কর্মচারীদের চাকুরি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত আউটসোর্সিং/দৈনিক মজুরিভিত্তিক ও প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মচারীদের ঠিকাদারী প্রথা বিলুপ্ত করে সরকারি চাকুরী বয়সসীমা পর্যন্ত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করা।
মাহবুবুর রহমান আনিস বলেন, আমাদের অনেকের ৩ মাস থেকে শুরু করে ৬ বছর পর্যন্ত বেতন বকেয়া রয়েছে। আমরা গত এক বছর ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও আমাদের সমস্যার সমাধান করেনি। আমাদের দাবি হলো, অবিলম্বে ঠিকাদার প্রথা বাতিল করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে যদি ঠিকাদার প্রথা বাতিল, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন পরিশোধ করা না হয়, তাহলে আমরা রাজপথে নামব।