ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ মন্তব্য করেছেন যে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ক্ষমতাসীন দলের প্রধান শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশে 'ভালো পরিবেশ তৈরি হওয়ার' সম্ভাবনা নষ্ট করেছেন। সাকিবের এই সমর্থন জনগণের কাছে তাকে 'ধিকৃত' করেছে বলেও তিনি মনে করেন।
আসিফ মাহমুদ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং সাকিব আল হাসানের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, মাশরাফি আত্মগোপনে আছেন এবং সাকিব এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে আসতে পারছেন না।
ক্রীড়া উপদেষ্টার মতে, সাবেক জননন্দিত ক্রিকেটারদের এই পরিস্থিতি ভবিষ্যৎ খেলোয়াড়দের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, “মাশরাফি বিন মুর্তজার মতো খেলোয়াড় আমাদের আইডল ছিলেন। শুধুমাত্র পলিটিকস করার কারণে কী পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। এটা ভবিষ্যৎ খেলোয়াড়দের জন্য একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে, বর্তমান খেলোয়াড়দেরও।”
আসিফ মাহমুদ অভিমত দেন যে কোনো চলমান খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার শেষ না হওয়ার আগে রাজনীতিতে জড়ানো উচিত নয়। তিনি অতীতের সরকার আমলের প্রসঙ্গে বলেন, “কোনো রানিং খেলোয়াড়ের অবশ্যই পলিটিকসে জড়িত হওয়া উচিত না। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট বলতে তো কোনো বিষয় ছিল না। নীতিনির্ধারকরা তো জড়িত হতেনই, খেলোয়াড়রাও রাজনীতিতে জড়িত হতেন; এটা পৃথিবীর কোথাও আপনি হয়তো দেখবেন না, শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব।”
ক্রীড়া উপদেষ্টা সাকিব আল হাসানকে নিয়ে একটি পুরনো ঘটনা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, গত বছর সাকিব তাকে বলেছিলেন যে তাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন 'জোর করে' দেওয়া হয়েছিল। এই কারণে কয়েকজন বোর্ড কর্তা চেয়েছিলেন, সাকিব যেন তার অবস্থান স্পষ্ট করে দেন যে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন, এবং তাকে যেন জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনা হয়।
আসিফ বলেন, “কয়েকজন বোর্ড কর্তা চেয়েছিলেন, তিনি যেহেতু বলেছেন তাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে, তাই তাকে যেন ফেরানো হয়। তিনি সেটা পরিষ্কার করে বলুক, তিনি যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না সেটাও পরিষ্কার করুক। তিনি চেষ্টা করেছিলেন, ওই প্রসেসটাতেও তিনি গিয়েছিলেন।”
তবে, শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানানোর পর সেই প্রক্রিয়া আর এগোয়নি। আসিফ মাহমুদের ভাষ্য, “কিন্তু পরবর্তীতে সেটা কন্টিনিউ করেনি, সেটা আসলে হয়ে ওঠেনি। ভালো পরিবেশ তৈরি হওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, সেটা শেখ হাসিনাকে সরাসরি সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে নষ্ট হয়েছে। এবং বাংলাদেশের জনগণের মধ্য থেকে তিনি ধিকৃত হয়েছেন। সার্বিক দিক থেকেই মনে হয়েছে সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ দলে খেলা উচিত না।”
সাকিব আল হাসানের নামে একাধিক ফৌজদারি মামলা চলমান থাকায় তার দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। আসিফ মাহমুদ এই বিষয়ে তার এখতিয়ার না থাকার কথা জানিয়ে বলেন, “আপনি ফৌজদারি মামলার আসামী, আমার তো এটা বলার এখতিয়ার নাই যে আপনি আসেন খেলেন, চলে যান! এটা আমার কনসার্নও না, আমাদের দায়িত্বও না।”