ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে নর্ডিক অঞ্চলের তিনটি দেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের খবর নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই রাষ্ট্রদূতেরা হলেন—ঢাকায় নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন আরাল্ড গুলব্রানসেন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস, এবং ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মলার। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের এই দেশগুলো বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, টেকসই উন্নয়ন এবং মানবাধিকার ইস্যুতে দীর্ঘদিনের অংশীদার।
সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র একটি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে যে, গত সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে সাবের হোসেন চৌধুরীর নিজ বাসভবনে অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন অনুসারে, বৈঠকটি গতকাল দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে।
সূত্রের খবর, তিনজন রাষ্ট্রদূতই ফ্ল্যাগ ছাড়া একই গাড়িতে চড়ে সাবের হোসেনের বাসভবনে প্রবেশ করেন। বৈঠক শেষে নজর এড়াতে তাঁরা বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে প্রস্থান করেন। সাধারণত কূটনৈতিক সাক্ষাতের ক্ষেত্রে এমন ধরনের সতর্কতা ও গোপনীয়তা অনুসরণ করা হয় না। সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের বর্তমান 'নাজুক' রাজনৈতিক অবস্থানের কারণেই বৈঠকের খবর গোপন রাখার প্রয়োজনীয়তা ছিল। সূত্র আরও জানায়, এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল, আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতার সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের এমন বৈঠক দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, এই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রিয় অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তাঁর মন্তব্য প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দেওয়া ফেসবুক পোস্টে পিনাকী লেখেন: “সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় রাষ্ট্রদুত যাইয়া বৈঠক করে কেমনে? ফাইজলামি পাইছেন? সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিনের শর্ত কী ছিলো? ওরে জামিন দিছেন কি আওয়ামী লীগ নিয়া দেন-দরবার করার লাইগ্যা? হয় এই রাষ্ট্রদুত গুলারে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগে খেদান নয়তো সাবের হোসেনরে জেলে ভরেন। কথা ক্লিয়ার।”
তাঁর এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক এবং সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিনের শর্তাবলী নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।