রাজশাহী (রাবি): রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে ভিন্ন ভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভর্তি পরীক্ষা উপ-কমিটির বৈঠকে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের ডাক দিলে বিভিন্ন হল ও মেস থেকে শিক্ষার্থীরা এসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। শুরুতে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন। কিছু সময় পর শাখা ছাত্রশিবির একটি মিছিল নিয়ে সেখানে যোগ দেয়। তবে শিবির উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিলেও ছাত্রদল এবং অন্যান্য সংগঠন কিছুটা দূরে অবস্থান করে।
কর্মসূচির একপর্যায়ে উভয় পক্ষ আলাদা আলাদা স্লোগান দিতে শুরু করে। এরপর ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং প্যারিস রোডে একত্রিত হয়ে স্লোগান দেন।
এ বিষয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছিলাম। কিন্তু জায়গা সংকটের কারণে একটু সরে দাঁড়াই। এরপর অন্য দলগুলোকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাই। তাঁরা তা না করে আন্দোলনকে কুক্ষিগত করতে চেয়েছেন।”
অন্যদিকে, ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিন বিশ্বাস এশা জানান, “আমরা দলীয় পরিচয়ে আসিনি, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের দলীয় রাজনীতির মধ্যে টানার চেষ্টা করা হয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের একাংশের মতে, এই বিভাজন আন্দোলনকে বানচাল করার একটি পরিকল্পিত কৌশল হতে পারে।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী সজিবুর রহমান বলেন, “আমরা শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলনে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি কেউ এক দিকে, আর কেউ অন্য দিকে অবস্থান নিয়েছে। এতে আন্দোলনের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।”
প্রতিবেদন লেখার সময় সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, শর্ত সাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর সন্তানরা ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেলেই ভর্তির সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে বৈষম্য দূরীকরণ ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তারা জানান, ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু হবে।