নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সম্প্রতি বলেছেন যে, পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিকভাবে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তার মতে, এই পদ্ধতিতে দলটি জাতীয় পার্টির প্রতীকে (লাঙল) ফিরে আসতে পারে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত “আগামী জাতীয় নির্বাচনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রভাব” শীর্ষক এক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, নির্বাচনে প্রতীক গুরুত্বপূর্ণ হলেও প্রভাব বিস্তারকারী নয়। তিনি মনে করেন, আগামী পাঁচ মাসে দেশের রাজনীতিতে অনেক অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আসতে পারে। পিআর পদ্ধতি বর্তমান পরিস্থিতিতে বাস্তবসম্মত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একই সাথে তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের ‘লেজ’ নয়, বরং ‘মাথা’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনে সামান্য প্রভাব ফেললেও, এটি সামগ্রিক ফলাফল বদলে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে না।
তিনি জুলাই সনদকে ঘিরে একটি ঐকমত্যের "সিলভার লাইন" দেখতে পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন এবং এটি বাস্তবায়নের আশা প্রকাশ করেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ছোট ছোট দলগুলোর মধ্যে একীভূত হওয়ার সম্ভাবনাকে তিনি ইতিবাচক হিসেবে দেখেন। তবে, জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে একটি অনিবন্ধিত দলের সদস্যের অন্তর্ভুক্তিকে তিনি সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণও এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং বর্তমানে জনগণের কাছে তারা ধিকৃত। তিনি আসন্ন ফেব্রুয়ারি মাসের নির্বাচনে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণের আশা প্রকাশ করেন। কিরণ আরও বলেন, আদর্শবিহীন রাজনীতি দেশের ভবিষ্যতের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে, এবং এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। তিনি অভিযোগ করেন যে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল এবং সেই সময় দেশের জনগণ গোলাম হয়েছিল।
তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হলে দেশ মহাসংকটে পড়বে এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তার মতে, ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনরুত্থান ঠেকাতে নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচন হওয়া জরুরি। তবে, নির্বাচনে যেন কোনো দুর্নীতি না হয়, সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে ছায়া সংসদ বিতর্কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা জয়লাভ করে। বিতর্কে বিচারক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেল এবং সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন।