ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ পাঁচজনকে ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার একটি আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চাঁদাবাজির এই মামলায় রাব্বিসহ পাঁচ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল ইসলাম, আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুর রহমান তাদের কারাগারে পাঠিয়ে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন: আবু সুফিয়ান, আব্দুর রহমান ওরফে মানিক, হাবিবুর রহমান ফরহাদ এবং শাহিন হোসেন।
মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার 'সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার'-এর মালিক আফরুজা শিল্পী বাদী হয়ে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে রোববার রাতে চাঁদাবাজির অভিযোগে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আসামিদের আটক করেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০ সেপ্টেম্বর রাতে আসামি শাহিন হোসেন তার সন্তান প্রসবের জন্য স্ত্রীকে ওই ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। নবজাতকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও শাহিনের অনুরোধে সেখানেই প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়। পরে তার স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করেন। মানবিক কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো অর্থ না নিয়েই শাহিনকে ছাড়পত্র দেয়।
তবে, বাদীর অভিযোগ, ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে আসামিরা হাসপাতালে এসে বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনায় মামলা না করার বিনিময়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে এবং হাসপাতাল থেকে একজনকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। এই পরিস্থিতিতে, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর আসামিরা চলে যায় এবং বাকি টাকা দ্রুত পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকে। পরবর্তীতে, আসামিরা মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে বাকি টাকা দাবি করতে থাকে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয় যে, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আসামিরা ফোন করে আফরুজা শিল্পীকে হাজারীবাগের পশ্চিম ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডে ডেকে নিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা নেয় এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আফরুজা শিল্পী বিষয়টি মৌখিকভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিদের আটক করে।
এর আগে, হাক্কানী পাবলিশার্সের মালিকের বাসায় মধ্যরাতে প্রবেশের চেষ্টার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাব্বিসহ তিন জন আটক হয়েছিলেন। পরে জাতীয় নাগরিক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের উপস্থিতিতে পরিবারের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে পুলিশ রাব্বিকে ছেড়ে দেয়।