কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। আইনগত বিধি নিষেধ থাকায় সেন্টমার্টিন যাওয়ার সুযোগ নেই উখিয়ার ইনানী থেকে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নীতিগত সম্মতি প্রদান বিষয়ে পাঠানো চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়েছে। ইনানী জেটি যেহেতু ইসিএ এলাকায় অবস্থিত। তাই এটা নৌরুট হিসেবে ব্যবহ্নত হলে এখানে বিভিন্ন ক্রুজশীপ, লঞ্চ, ট্রলার ইত্যাদির গতিবিধি বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে ইনানী জেটি সংলগ্ন এলাকাসহ তার চতুর্দিকে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গড়ে উঠে জনসমাগম বৃদ্ধি করবে, যা ঐ এলাকার সংকটাপন্ন জীববৈচিত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। এমতাবস্থায় ইনানী মৌজাটি ইসিএভুক্ত হওয়ায় ইনানী-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচলে আইনগত এবং বিধিগতভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বিধায় এই রুটে নৌযান চলাচলের সুযোগ নেই। বিকল্প হিসেবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া-সেন্টমার্টিন বিদ্যমান জেটি ব্যবহারক্রমে নৌযান চলাচলে নির্দেশক্রমে নীতিগত সম্মতি প্রদান করা হয়েছে।
চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগের নিয়মেই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। কয়েক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কিছু লোকজন প্রচারণা চালিয়ে আসছিল, উখিয়ার ইনানী থেকে সেন্টমার্টিনে যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ। এতে পর্যটকরা নানাভাবে বিভ্রান্তিতে পড়ে। এমন আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আজ সরকারি এ সিদ্ধান্তটি এসেছে।
এর আগে, গত ২২ অক্টোবর সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ১২টি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।