বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির এবং ঢাকা-৮ আসনে দল মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণভোটের আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণভোটে জনগণ যদি সনদের পক্ষে রায় দেয় তবে তা বাস্তবায়ন হবে, আর বিপক্ষে ভোট দিলে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি থাকবে না। জামায়াত সকল আন্দোলন-সংগ্রাম জনগণের জন্য করে এবং জনগণের যেকোনো মতামত তারা মেনে নেয়।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানার উদ্যোগে ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ অভিযান শেষে বক্স কালভার্ট রোডে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হেলাল উদ্দিন এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো: ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করা।
তিনি উল্লেখ করেন, এই ৫ দফা শুধু জামায়াতে ইসলামীর একক দাবি নয়, বরং পুরো জাতি এর বাস্তবায়ন চায়। এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পেতে পারে। তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার জনগণের প্রতি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান।
পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই পথসভায় জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভার পর তারা ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানে লিফলেট বিতরণ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যা দিবস উপলক্ষে আধিপত্য প্রতিরোধ আন্দোলনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে ড. হেলাল উদ্দিন প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনের স্লোগান ছিল "ভারতীয় আধিপত্যবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, পানির আগ্রাসন ও সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবিতে।"
বক্তব্যে তিনি আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আবরার ফাহাদের অপরাধ কী ছিল? তিনি দাবি করেন যে, শেখ হাসিনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাধন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতারা তাকে শিবিরের তকমা দিয়ে হত্যা করেছে, কারণ সে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের নামাজের দিকে আহ্বান করত।
তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সকল অপকর্মের পেছনে আধিপত্যবাদী গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ছিল। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনে এই গোষ্ঠী বেশি হতাশ হয়েছে এবং তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। তিনি দেশবাসীকে আধিপত্যবাদের সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
আধিপত্য প্রতিরোধ আন্দোলনের চেয়ারম্যান মো. মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্য জোটের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ্ব মাওলানা আলতাফ হুসাইন মোল্লা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আমীন।