জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের কাছে থাকা প্রমাণ এতটাই শক্তিশালী যে, বিশ্বের যেকোনো আদালতে তাদের সাজা নিশ্চিত করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের পর এক ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, প্রসিকিউশনের কাছে থাকা সাক্ষ্যপ্রমাণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এগুলো একটি অকাট্য প্রমাণের শৃঙ্খল, যার মাধ্যমে বিচার অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রমাণ করা যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রমাণগুলোর মধ্যে ভিডিও ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহত ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য, ফরেনসিক প্রমাণ, মোবাইল ফোনের ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজ অন্তর্ভুক্ত। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এই নিষ্ঠুর ও নির্মম ঘটনার বিচার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এবং অকাট্যভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন।
এর আগে চিফ প্রসিকিউটর ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সূচনা বক্তব্য পেশ করেন।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ সূচনা বক্তব্য শোনার পর সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরও জানান, আশুলিয়ায় ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশের ভ্যানে তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় একজন ব্যক্তি জীবিত ছিলেন। এই ঘটনাকে তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন বর্বরতা হিসেবে উল্লেখ করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিচারকার্য চলছে, যার মধ্যে আটজন পলাতক। সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং সোমবার থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।