জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর কুষ্টিয়া জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন দুই নেতা। বুধবার রাতে এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও পদত্যাগ চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তারা একটি আবেদন জমা দেন।
লিখিত আবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অব্যাহতি চাওয়া এই দুই নেতা হলেন এনসিপি কুষ্টিয়া জেলা শাখার ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. এবাদত আলী এবং ২ নম্বর সদস্য শরিফুল ইসলাম সবুজ।
মো. এবাদত আলী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে তার আবেদনে উল্লেখ করেন যে তিনি জুলাই ২০২৪ আন্দোলনে একজন সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের পর তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটি নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের কুষ্টিয়া সদরের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং পরে এনসিপি গঠিত হলে তাকে জেলা শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে পারিবারিক দায়দায়িত্ব ও বয়স বিবেচনায় তিনি দলের প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তিনি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনে যারা রাজপথে থাকবেন, তাদের প্রতি নৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানান।
অন্যদিকে, শরিফুল ইসলাম সবুজ তার পদত্যাগপত্রে লেখেন, তিনি সূচনালগ্ন থেকেই এনসিপির কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বিশ্বাস করেছিলেন যে দলটি জুলাই আন্দোলনের মূল্যবোধ ধারণ করবে। কিন্তু তিনি অভিযোগ করেন, "দল তার পথ হারিয়েছে" এবং "নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডে আপসনীতি ও সুবিধাবাদী ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী।" তিনি স্পষ্ট করেন, আন্দোলনের চেতনা বিসর্জন দিয়ে কোনো দল বা নেতৃত্বকে অনুসরণ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সব কার্যক্রম ও সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করছেন।
এবাদত আলী ও শরিফুল ইসলাম সবুজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দলীয় কর্মকাণ্ডে অনিয়ম ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার পরিপন্থী কর্মকাণ্ড-সহ ব্যক্তিগত কারণে তারা এনসিপির সব ধরনের দায়িত্ব ও কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন। ভবিষ্যতে দলে থাকা বা না-থাকার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি বলেন, তিনি পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছেন। তবে দলীয় নিয়ম অনুযায়ী এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক পদত্যাগপত্র জমা পড়েনি এবং তাদের পদত্যাগের কারণও তাকে জানানো হয়নি।