নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রাথমিক পর্যালোচনায় নিবন্ধনের জন্য বিবেচিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে, দলের পক্ষ থেকে পছন্দের তালিকায় প্রথমে রাখা প্রতীক ‘শাপলা’ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইসি। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯(১) অনুযায়ী প্রার্থীর অনুকূলে বরাদ্দের জন্য নির্ধারিত প্রতীকের তালিকায় বর্তমানে ‘শাপলা’ প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত নেই।
এই পরিস্থিতিতে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে বিধিমালা অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রতীকগুলোর মধ্য থেকে একটি প্রতীক বেছে নিয়ে লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে এনসিপিকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ইসি কর্তৃক প্রেরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে যে জাতীয় নাগরিক পার্টির নিবন্ধনের আবেদন প্রাথমিক পর্যালোচনায় গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। আবেদনপত্রে পছন্দের প্রতীক ক্রমানুসারে শাপলা, কলম ও মোবাইল উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু বিধিগত কারণে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।
চিঠিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৯০৮ (১) (খ)-এর বিধানের বিষয়টিও এনসিপিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিধান অনুযায়ী, কোনো দল কর্তৃক মনোনীত সব প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত প্রতীক থেকে পছন্দকৃত যেকোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করা হবে এবং সেই প্রতীক দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে, যদি না দলটি পরবর্তীতে অন্য কোনো প্রতীক লাভে ইচ্ছা প্রকাশ করে।
এই জটিলতা নিরসনে নির্বাচন কমিশন এখন জাতীয় নাগরিক পার্টিকে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯ (১) অনুযায়ী ইসির দেওয়া প্রতীকের তালিকা থেকে এখনও বরাদ্দ হয়নি এমন একটি প্রতীক দ্রুত পছন্দ করে নিতে বলেছে। দলের নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এই পছন্দটি আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে কমিশনকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে, এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক (গণমাধ্যম) আরিফুর রহমান তুহিন জানিয়েছেন, যেহেতু শাপলা দিতে আইনগত কোনো বাধা নেই, সেহেতু তারা ‘শাপলা’ মার্কাই চান এবং এর বিকল্প কিছু ভাবছেন না। তিনি মনে করেন, কমিশন তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে এবং নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে এসে একটি বিশেষ দলের নির্দেশে শাপলা প্রতীক দিচ্ছে না। তুহিন আরও জানান, প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকলে কমিশন সেটাকে অন্তর্ভুক্ত করুক—এটা সামান্য কয়েকদিনের বিষয়। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, "আমরা শাপলাতেই আছি।"