ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিধস বিজয় নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি একটি ভিডিও বার্তায় তার মতামত ব্যক্ত করেছেন।
তিনি মনে করেন, এই ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতির সামগ্রিক হিসাব-নিকাশকে এলোমেলো করে দিয়েছে। তার মতে, এ নির্বাচনের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সরকারি বাসভবন 'যমুনা'-তে নতুন করে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে।
রনি প্রশ্ন তোলেন, শিবির কীভাবে এত ভোট পেল এবং ছাত্রলীগ তাদের ভোট দিয়েছে কিনা, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এই ফলাফল আগামী জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে কিনা এবং বিএনপি'র জন্য ৫০টি আসন পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে কিনা, সে বিষয়েও তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, "যমুনায় দীর্ঘদিন ধরে ভাটার টান চলছিল। যমুনার আকর্ষণ কমে যাচ্ছিল। সেখানে যারা কর্মরত ছিলেন তাদের মধ্যে হতাশা এবং দোদুল্যমানতা দেখা যাচ্ছিল। ডাকসু নির্বাচনের পরে সেখানে নতুন প্রাণ সঞ্চার হয়েছে, জোয়ার এসেছে।"
রনি আরও দাবি করেন যে, শেখ হাসিনার পতনের জন্য ড. ইউনূস, জামায়াত ও এনসিপি (নাগরিক প্ল্যাটফর্ম) দীর্ঘদিন ধরে দেশ-বিদেশে চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে আসছিল। তাদের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই ক্ষমতার পট পরিবর্তন হয়েছে। তিনি মনে করেন, এই পরিবর্তনের পেছনে একটি পূর্বপরিকল্পনা ছিল, যেখানে মার্কিন ডিপস্টেটের সঙ্গেও ড. ইউনূস, জামায়াত এবং এনসিপির সংযোগ ছিল। তিনি বলেন, এখানে হঠাৎ করে বদিউল আলম মজুমদার বা আলী রীয়াজ আসেননি, তাদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নানা কারণে জনমত ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এই পরিস্থিতিতে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রনি বলেন, বিএনপি অতি আত্মবিশ্বাসী ছিল যে তারা এই নির্বাচনে জয়ী হবে এবং শিবির জিততে পারবে না। কিন্তু ফলাফল উল্টো হয়েছে, যেখানে শিবির বিজয়ী হয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন চলছে এবং তিনি মনে করেন না যে সেখানে বিএনপি ভালো ফল করবে।
রনি দাবি করেন, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে যে 'ট্রেন' বা ইমেজ তৈরি হয়েছে, জামায়াত তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। এই ভূমিধস বিজয়ের ফলে জামায়াত, ড. ইউনূস ও এনসিপির মধ্যে যে পুরনো ঐক্য ছিল, তাতে আবার নতুন গতি এসেছে।