চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে মশালমিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
এ সময় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে জোটের সদস্যরা প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে লাল রং ছিটিয়েছেন। জোটের দাবি, এই লাল রং প্রক্টরের ‘রক্তখেকো মনোভাব’ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে মশালমিছিল শুরু হয় এবং প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পূর্বে ঘোষিত সময়সীমা পার হওয়ায় জোট প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের জন্য নতুন করে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।
এই কর্মসূচিতে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও নারী অঙ্গনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। তাঁরা সাতটি সুনির্দিষ্ট দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। দাবিগুলো হলো:
১. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
২. শিক্ষার্থীদের জন্য ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা।
৩. শিক্ষার্থীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪. সংঘর্ষের জন্য দায়ী অপরাধীদের বিচার করা।
৫. একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা।
৬. সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা।
৭. প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির জানান, প্রশাসনকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পদত্যাগ না করায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে না পারায় এই আন্দোলন চলছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক মোহাম্মদ আকিব প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে। তিনি সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং প্রক্টরের পদত্যাগ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, কয়েকজন শিক্ষার্থী এখনও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ এবং সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ কোরবান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাস-সংলগ্ন জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২২০ জন আহত হন, যার মধ্যে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী। চিকিৎসকদের মতে, তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং একজন এখনও লাইফ সাপোর্টে আছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করে এবং পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার আদালত তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।