দীর্ঘ প্রায় দশ বছর প্রবাস জীবন শেষে নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হক। আগামীকাল, রবিবার (৫ অক্টোবর), আনুমানিক সকাল ১১টায় তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বিদেশে অবস্থানকালে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বর্তমান সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গত এক দশকে রাশেদুল হক অস্ট্রেলিয়া থেকে বিভিন্ন কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন।
রাশেদুল হক ২০১৯ সালে বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য হিসেবে তাঁর কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০২২ সালে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষ সহকারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে ছিল- বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবন্দি ইস্যু এবং দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট (আপার হাউস সিনেট ও নিম্নকক্ষ)-এর সদস্য এবং অন্যান্য কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন।
তাঁর প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি মন্তব্য করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি উত্থাপন করা হয়। এই দাবির প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আল বেনেজি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনিও বিবৃতি প্রদান করেন।
পরবর্তীকালে, বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে মোশন পাস হয়। এছাড়াও, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে পার্লামেন্টে একটি নিন্দা প্রস্তাবও পাস হয়। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, ৪৩ জন সিনেটর ও এমপি বাংলাদেশের নির্বাচন এবং র্যাবের বিলুপ্তির দাবিতে বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা এবং শহীদদের পুনর্বাসনেরও দাবি জানান।
১/১১ পরবর্তী সময় থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাশেদুল হক নিয়মিতভাবে সেমিনার, আলোচনা সভা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্টেটে বিক্ষোভ প্রতিবাদ ও সমাবেশ করেছেন।
দীর্ঘ এক দশক ধরে দল ও দেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাশেদুল হকের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম দলের হাইকমান্ডসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর তাঁর দেশে ফেরা নিঃসন্দেহে দেশের রাজনৈতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।