সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে প্রণীত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে বিএনপি।
তবে, তারা এই সংস্কারগুলো নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে মত দিয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। এনসিপি এ ক্ষেত্রে গণপরিষদ নির্বাচনের ওপর জোর দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে দলগুলোর নেতারা নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেন।
ঐকমত্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত হওয়া জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে এর আগে দু'বার রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া হয়েছিল। এখন এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। সম্ভাব্য পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট এবং নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে সংস্কারের মতো প্রস্তাবগুলো উঠে এসেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তারা সনদের বিষয়ে খুব বেশি ভিন্নমত (নোট অফ ডিসেন্ট) দেননি। কিছু বিষয়ে তারা দ্বিমত পোষণ করেছেন, যেমন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের বিষয়ে ঐকমত্য থাকলেও, এর গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের ভিন্নমত রয়েছে। তারা এই বিষয়ে তাদের নিজস্ব প্রস্তাবও জমা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, "আমরা সংবিধানিক সংশোধনের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এই আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা এখনো সনদে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত এবং এর সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।"
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. তাহের বলেন, সংবিধানের অনেক ধারা বর্তমানে অকার্যকর। এই পরিস্থিতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ জারি করা। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে কমিশনের দেওয়া পাঁচটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি আইনি কাঠামো তৈরি হবে এবং সেই ভিত্তিতেই আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে, বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ মনে করেন, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ অনুসরণ করে সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
অন্যদিকে, গণ অভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা দল এনসিপি দাবি করেছে, সংবিধান সংস্কার অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে হওয়া উচিত।
বৈঠকের শুরুতে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেন, জুলাই সনদই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথরেখা তৈরি করবে।