দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। এই জয়ের ফলে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথে নতুন এক ইতিহাস রচিত হলো। এটি পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের টানা ষষ্ঠ জয়। এর আগে ৭৪ বছরের ইতিহাসে কোনো দলই এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টানা পাঁচটির বেশি ম্যাচ জিততে পারেনি।
ম্যাচ শুরুর আগে মাঠের বাইরের নানা ঘটনা এবং মাঠের ভেতরের সামান্য উত্তাপ দর্শকদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছিল। কিন্তু ম্যাচের ফলাফল আগের মতোই একতরফা হয়েছে। ম্যাচের চিত্রনাট্য ছিল অনেকটা গ্রুপ পর্বের ম্যাচের মতোই। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে শেষবার ভারতের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। এরপর থেকে সব ম্যাচেই জয়ী দলের নাম ভারত।
ম্যাচের মাঝবিরতিতে মনে হয়েছিল এবার লড়াই কিছুটা জমবে। এর কারণ ছিল ভারতীয় ফিল্ডারদের ক্যাচ ফসকানো এবং পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের তুলনামূলক ভালো ব্যাটিং পারফরম্যান্স। ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান হার্দিক পান্ডিয়ার করা প্রথম ওভারেই অভিষেক শর্মার হাতে জীবন পান। এরপর পাকিস্তানের ইনিংসের প্রধান ভূমিকায় ছিলেন তিনিই। জাসপ্রীত বুমরার বিপক্ষে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। বুমরা তার ৪ ওভারে কোনো উইকেট না নিয়ে ৪৫ রান দেন, যার মধ্যে পাওয়ার প্লের প্রথম তিন ওভারেই দেন ৩৪ রান। টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লেতে এটি বুমরার সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড।
ভারতের হয়ে প্রথম উইকেটটি পান হার্দিক পান্ডিয়া। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা আটটি ম্যাচের সব কটিতেই উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ধরে রাখলেন তিনি। তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফখর জামান আউট হন। তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও ফখর জামান মাঠের বাইরেও নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
ফখর জামানের বিদায়ের পরও পাকিস্তান একটি ভালো শুরু পেয়েছিল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৫৫। কিন্তু সাইম আইয়ুব ১৭ বলে ২১ রান করে শিভম দুবের বলে আউট হতেই পাকিস্তানের রানের গতি কমে যায়। টানা ৩৯ বলে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি তারা। ফারহান ৫ চার ও ৩ ছক্কার সাহায্যে ৪৫ বলে ৫৮ রান করে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার হন। পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৭১ রান সংগ্রহ করে, যা একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের আশা জাগিয়েছিল।
কিন্তু সেই আশা ম্যাচের শুরুতেই শেষ করে দেন ভারতের দুই ওপেনার। অভিষেক শর্মা ইনিংসের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে জয়ের বার্তা দেন। অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের ৫৯ বলে ১০৫ রানের জুটিই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। এরপর ভারতের কিছু উইকেট পড়লেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই ছিল। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।