বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য এক নতুন মাইলফলক। দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী ফিফা রেফারি হওয়ার গৌরব অর্জন করতে চলেছেন সারাবান তহুরা।
৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ফিটনেস টেস্টে দেশের প্রথম নারী ফিফা রেফারি জয়া চাকমা অংশ না নিলেও, সারাবান তহুরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এক ধাপ এগিয়ে ছিলেন। শনিবার (আজ) দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত ফিটনেস টেস্টে জয়া চাকমা অংশগ্রহণ করলেও অনুত্তীর্ণ হন।
বাংলাদেশে নারী ফিফা রেফারি এবং সহকারী নারী ফিফা রেফারি—এই দুটি পদে একটি করে কোটা নির্ধারিত রয়েছে। এবারের ফিটনেস টেস্টে সারাবান তহুরা ও সালমা আক্তার মনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলস্বরূপ, তারা ২০২৬ সালের জন্য যথাক্রমে নারী ফিফা রেফারি ও সহকারী নারী ফিফা রেফারি হিসেবে মনোনীত হচ্ছেন। জয়া চাকমা উত্তীর্ণ হলে বাফুফের রেফারিজ কমিটিকে নারী কোটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হতো, যা বর্তমানে আর প্রয়োজন হচ্ছে না।
আজই (শনিবার) বাফুফে ২০২৬ সালের জন্য নির্বাচিত রেফারি ও সহকারী রেফারিদের তালিকা ফিফায় প্রেরণ করবে। বাফুফের প্রেরিত তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে ফিফা আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেয় এবং এরপরই প্রদান করা হয় ফিফা ব্যাজ। সাধারণত, বাফুফের পাঠানো তালিকাই ফিফা অনুমোদন করে থাকে। অতীতে একবার সহকারী নারী রেফারি সালমা আক্তারের বয়স ন্যূনতম ২৩ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তিনি স্বীকৃতি পাননি। নারী রেফারি হওয়ার ক্ষেত্রে ফিফার ন্যূনতম বয়সসীমা ২৫ বছর। তহুরার বয়স পূর্ণ হওয়ায় এবং বাফুফের সকল যোগ্যতা-শর্ত সম্পন্ন হওয়ায় তার নারী ফিফা রেফারি হওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।
জয়া চাকমার পর সারাবান তহুরা বাংলাদেশের দ্বিতীয় নারী ফিফা রেফারি হতে যাচ্ছেন। মূলত খো খো খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত তহুরা বাংলাদেশ নারী খো খো দলের অধিনায়কও। তিনি ২০২১ সাল থেকে রেফারিং শুরু করেন এবং সম্প্রতি ফিফা রেফারির পরীক্ষার পূর্বে জাতীয় রেফারি হিসেবে স্বীকৃতি পান। বাফুফের মনোনয়নে তিনি ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী টুর্নামেন্টে চারটি ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেন। এই মাসেই তিনি জুনায়েদ শরীফের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় এএফসি রেফারি একাডেমি কোর্সেও যোগ দেবেন। রেফারিং একটি সম্মানের পেশা হলেও, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সম্মানী না থাকায় রেফারিরা সাধারণত অন্য পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। সারাবান তহুরা সানবীমস স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
এদিকে, পুরুষ রেফারি কোটার (৪ জন) বিপরীতে ৮ জন এবং সহকারী রেফারি কোটার (৬ জন) বিপরীতে ১০ জন পাস করায় রেফারিজ কমিটিকে সভায় বসতে হয়েছে। সহকারী রেফারি হিসেবে নুরুজ্জামান ও মনির ঢালী এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ফিফা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আসছেন। সহকারী রেফারি ৬ জন নির্বাচন করা তুলনামূলক সহজ হলেও, ৪ জন রেফারি চূড়ান্ত করতে রেফারিজ কমিটি গভীর বিশ্লেষণ করছে। কোটার চেয়ে বেশি রেফারি পাস করায় রেফারিজ কমিটি সভার মাধ্যমে তালিকা চূড়ান্ত করলেও, তালিকা প্রকাশ করেনি। ফিফায় তালিকা পাঠানোর পরই তা অবহিত করা হবে, যাতে কেউ তদবিরের সুযোগ না পায়।