বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা চার দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় নীলফামারী জেলায় চলতি মৌসুমের আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মাঠজুড়ে দেখা গেছে, আধপাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে, গাছের ডগা ফেটে গেছে এবং অনেক ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে আছে। এতে ধানের গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, এবার ঘরে ফলন তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিচু জমিগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
ডিমলা উপজেলার কৃষক মোছাদ্দেক হোসেন জানান,
“ধান প্রায় পেকে গিয়েছিল, কয়েকদিন পরই কাটার কথা ছিল। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এখন পানি না নামলে ফলন ঘরে তোলা অসম্ভব হয়ে যাবে।”
অন্যদিকে ডোমারের কৃষক আব্দুল করিম বলেন,
“বছরের পর বছর এই ফসলের আশায় অপেক্ষা করি। কিন্তু এই বৃষ্টি আমাদের সব পরিশ্রম শেষ করে দিল।”
শুধু ধান নয় আলু ক্ষেতেও ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকলে এসব ফসলের শিকড় পচে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষক সমাজ।
নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনজুর রহমান জানান,
“নিম্নচাপের প্রভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। কিছু এলাকায় ধান ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকদের দ্রুত পানি নিষ্কাশন, নুয়ে পড়া ধানগাছ বাঁধা এবং ক্ষেতে পানি জমতে না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।”
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শুরু করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক সমাজের দাবি, এই ক্রান্তিকালে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সহায়তা ও পুনর্বাসন প্রণোদনা দেওয়া হলে কৃষকরা কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।