বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেছেন, আওয়ামী লীগের ভোট জামায়াতে গেছে বলাটা দলটিকে আরও বিপদে ফেলবে।
তিনি মনে করেন, এ ধরনের মন্তব্য করার আগে দলের অভ্যন্তরীণ ফোরামে আলোচনা করা উচিত। সম্প্রতি একটি টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি শিবিরের ডাকসু জয়ের কৌশল নিয়েও কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা মনে করেন, পরাজয় স্বীকার করে সঠিক যুক্তিতে কথা বলা জরুরি। অযৌক্তিক মন্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় যারা পরাজিত হয়েছে, তারা অস্বীকারের মধ্যে না থেকে বা “আওয়ামী লীগের ভোট জামায়াতে চলে গেছে”—এ ধরনের কথা বলে দলকে আরও বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলছে। উদাহরণস্বরূপ, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী পেয়েছে ৫ বা ৬ হাজার ভোট, আর শিবিরের প্রার্থী পেয়েছে ১৪ হাজার ভোট। এখানে ৯ হাজার ভোটের একটি ব্যবধান আছে। তাহলে কি আপনি স্বীকার করছেন যে এই ৯ হাজার ভোট ছাত্রলীগের? এ ধরনের কথা না বলে বরং ঠান্ডা মাথায় দলীয় ফোরামে বসে চিন্তাভাবনা করে কথা বলা ভালো।’
তিনি আরও বলেন, রাজনীতির ধরন বদলে যাচ্ছে। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখা যায়, রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন (প্যারাডাইম শিফটিং) এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি এই পরিবর্তন বুঝতে না পারে, তাহলে ছাত্র সংসদ, স্থানীয় সরকার কিংবা জাতীয় নির্বাচন—সবক্ষেত্রেই তাদের মূল্য চোকাতে হবে।
রুমিন ফারহানা উদাহারণ দিয়ে বলেন, ‘আমরা একসময় বয়ানের রাজনীতি বা আইডেন্টিটি পলিটিক্স-এর জয় দেখেছি। যেমন—বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিচয়, ধর্মভিত্তিক পরিচয় বা ভাষাভিত্তিক পরিচয়। ভারতের দিকে তাকালে দেখা যায়, উগ্র ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে তারা নিজেদের আরও বেশি হিন্দু প্রমাণ করতে গিয়ে নানা কুকর্মের আশ্রয় নিচ্ছে। অন্যদিকে, দিল্লির আম আদমী পার্টি জনগণের কল্যাণভিত্তিক বা ওয়েলফেয়ার পলিটিক্স করছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে আগামীতে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের রাজনীতি, বাঙালি না বাংলাদেশি তত্ত্বের রাজনীতি, বা ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে যদি রাজনীতিতে লম্বা রেসের ঘোড়া হয়ে টিকে থাকতে হয়, তবে ওয়েলফেয়ার পলিটিক্স ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই।’