আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের জেরা চলছে। ট্রাইব্যুনাল তার পরবর্তী জেরার জন্য আগামী রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন সকাল সোয়া ১১টা থেকে নাহিদ ইসলাম ৪৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন। দুপুরে তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর বিকেল ৪টা পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাকে জেরা করেন। জেরা সম্পন্ন না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আগামী রোববার পর্যন্ত কার্যক্রম মুলতবি করেন।
মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম, এবং তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সহিদুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, মামুনুর রশীদসহ অন্যরা।
এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর নাহিদ ইসলাম বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। তার অবশিষ্ট সাক্ষ্য ১৮ সেপ্টেম্বর রেকর্ড করা হয়। একই দিনে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। এই মামলায় এ পর্যন্ত ৪৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন, এবং প্রসিকিউশন জানিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া আর তেমন সাক্ষ্যগ্রহণের সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, মামলার অন্যতম আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও এদিন সকালে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তার উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা জবানবন্দি দিচ্ছেন। গত ২ সেপ্টেম্বর চৌধুরী মামুন ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন এবং ৪ সেপ্টেম্বর তার জেরা শেষ হয়। তিনি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করে ক্ষমা চেয়েছেন এবং ট্রাইব্যুনালের সামনে অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যেখানে ৮১ জন সাক্ষীর তালিকা রয়েছে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।