সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি সৌদি আরব ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুদীর্ঘ ৫০ বছরের ইতিহাসে সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রথম আনুষ্ঠানিক চুক্তি।
সোমবার (৬ অক্টোবর, ২০২৫) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এই চুক্তিটি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরবের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সৌদি আরব বৃহত্তম শ্রমবাজার হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৬ সাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে কর্মী নিয়োগ শুরু হলেও সাধারণ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না। তবে, এর আগে ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি সই হয়েছিল।
নতুন এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কর্মী নিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও, কর্মী এবং নিয়োগকর্তা উভয়ের অধিকার ও স্বার্থ অধিকতর সুরক্ষিত হবে মর্মে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই চুক্তিটি ভ্রাতৃপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
চুক্তি সইয়ের পূর্বে সৌদি মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের উপদেষ্টার মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল কর্মী নিয়োগের চুক্তির সঠিক বাস্তবায়ন, ইকামা (রেসিডেন্সি পারমিট) নবায়নের দায়িত্ব নিয়োগকর্তার পালন, এবং দেশে ফিরতে ইচ্ছুক কর্মীদের স্বল্পতম সময়ে এক্সিট ভিসা প্রাপ্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উত্থাপন করেন।
জবাবে, সৌদি মন্ত্রী দ্রুত এসব বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে, নিরাপদ ও সুষ্ঠু অভিবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, এবং প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
এ সময় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন, মিশন উপপ্রধান এস এম নাজমুল হাসান, শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বীসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।