সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটির প্রভাবে ব্যস্ততম ঢাকা শহর এখন জনশূন্য। দুর্গাপূজা শেষ হলেও আজ শুক্রবার (৩ অক্টোবর, ২০২৫) রাজধানী জুড়ে চিরচেনা যানজটের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, ফলে নগরবাসীর চলাচলে ফিরেছে স্বস্তি। গণপরিবহনেও যাত্রীর চাপ নেই, দ্রুত গতিতে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে যানবাহন।
আজ সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক সরেজমিনে ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে ছুটির স্পষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন, শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে গাড়ির সারি বা ট্রাফিক সিগন্যালে দীর্ঘ অপেক্ষার চাপ ছিল না। পথচারীদের ভিড়ও ছিল নগণ্য। বাসগুলোতে যাত্রীর চাপ কম থাকায় ফাঁকা আসন নিয়েই গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
মিরপুর-নিউ মার্কেট সড়কের 'ঠিকানা' বাসের চালক আমজাদ হোসেন জানান, "গত দুই-তিন দিন ধরে যাত্রী কম। আজ যাত্রী আরো কমে গেছে। পূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে অনেকেই ঢাকার বাইরে চলে যাওয়ায় ঢাকা ফাঁকা। যে পথ যেতে সাধারণত দুই ঘণ্টা সময় লাগতো, তা বর্তমানে ৩০ মিনিটে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে।"
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে আজ উল্লেখযোগ্য চাপ নেই। ম্যানুয়ালভাবে পরিচালিত ট্রাফিক সিগন্যাল এলাকাগুলো অনেকটাই ফাঁকা ছিল, এবং কোথাও যানবাহনকে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়নি। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদেরও সড়কের পাশে অপেক্ষাকৃত স্বস্তিতে সময় কাটাতে দেখা যায়। বিজয় সরণিসহ কয়েকটি স্থানে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল সক্রিয় থাকলেও যানজট সৃষ্টি হয়নি।
অটোরিকশা চালক মতিন বলেন, "যানজট নেই, তবে যাত্রীও নেই। জুমার দিনে সাধারণত মানুষ কম বের হয়। আজ ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা। বাইরে না বের হলে আমাদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন।"
যাত্রীরা জানিয়েছেন, সড়ক, টার্মিনাল, বাজার এবং জনবহুল এলাকাগুলোতেও সেই চিরচেনা ভিড় নেই। গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম। বাসের যাত্রী আবুল হোসেন বলেন, "আজ বাসে ভিড় নেই। তবে যাত্রী তোলার জন্য প্রতিটি স্টপেজে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে, কারণ রাস্তায় যাত্রী নেই বললেই চলে। আগে যেখানে যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করতো, আজকে বাস যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে।"
সবসময় ব্যস্ত থাকা ধানমন্ডি সাত মসজিদ সড়ক, যেখানে বহু রেস্তোরাঁ ও হাসপাতাল রয়েছে, সেটিও আজ ফাঁকা দেখা গেছে। এই সড়কে বাসগুলোতে যাত্রীর চাপ ছিল কম এবং অটোরিকশার চলাচল ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি। মোহাম্মদপুরের অটোরিকশা চালক জলিল মিয়া বলেন, "আজ সকাল থেকে রাস্তা একেবারে ফাঁকা। যানজট তো একেবারেই নেই। ঈদের সময় ছাড়া এমন খালি রাস্তা দেখা যায় না। যাত্রী কম থাকায় তেমন ভাড়াও পাওয়া যায়নি।"