জাপানে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের 'জাপান সেল' বেশকিছু নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো জাপানের ক্রমবর্ধমান শ্রমবাজারের চাহিদা পূরণ করা এবং বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তির জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, জাপান সেলের কার্যক্রম জনসমক্ষে প্রচারের জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারির মাধ্যমে একটি ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই পোস্টে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পোস্টটি প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হবে।
জাপান শ্রমবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মন্ত্রণালয় 'জাপান ডেস্ক' চালু করেছে। জাপান টাইমস-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে ১ কোটি ১০ লাখ কর্মীর ঘাটতি হতে পারে। এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরির অধীনে কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুপ্রেরণায় ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কো-অপারেটিভ ফেডারেশন (এনবিসিসি), জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি লিমিটেড (জেবিবিআরএ) এবং কাইকম ড্রিম স্ট্রিট বিডি কোম্পানি লিমিটেড (কেডিএস)-এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জাপান ডেস্কের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো:
ড. আসিফ নজরুল, মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, বলেন, "আমাদের জনশক্তি রপ্তানির মূল লক্ষ্য হলো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচন। জাপান ডেস্ক এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।" তিনি আরও জানান, জাপানি কর্মকর্তাদের উপস্থিতি এই প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করতে পারে।
জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মানসম্পন্ন কর্মী পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাপান সরকার সংখ্যার চেয়ে দক্ষতার মান নিশ্চিত করতে আগ্রহী। তাই কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে (টিটিসি) উন্নত জাপানি ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
পাশাপাশি, কেডিএস-এর মাধ্যমে দক্ষ নার্সিং সেবা প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। সিটিজি কেডিএস গ্রুপের অধীনে একটি মডেল ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে, যেখানে জাপানি ভাষা ও দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এনবিসিসি এবং জেবিবিআরএ যৌথভাবে নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মী (SSW) ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগ করবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।