হামজা চৌধুরি এবং সামিত সোমের অন্তর্ভুক্তির পর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের শক্তিবৃদ্ধি ঘটেছে। এই দুই খেলোয়াড়ের আগমনের ফলেই ৪৫ বছর পর আবার এএফসি এশিয়া কাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। আগামীকাল, বুধবার, এশিয়া কাপ বাছাইপর্বে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটিকে কার্যত 'ডু অর ডাই' (বাঁচা-মরার) হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই ম্যাচে পরাজয় হলে বাংলাদেশের এশিয়া কাপে খেলার আশা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে যাবে।
তবে ম্যাচের আগে আজ অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা এবং অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া উভয়েই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা দলের সক্ষমতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, “আমরা জানি আমাদের সক্ষমতা আছে, ইতিহাস গড়তে পারি। আমি সব সময়ই স্কোয়াডের গুণগত মান নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে সাম্প্রতিক কিছু নতুন সংযোজন আমাদের দলকে আরও শক্তিশালী করেছে।”
ক্যাবরেরা আরও যোগ করেন, বাছাইপর্বের গ্রুপের চারটি দলই সমমানের। তাদের খেলার ধরণ বা স্টাইল ভিন্ন হলেও সামগ্রিক মান খুব কাছাকাছি। তিনি হংকংকে সিঙ্গাপুরের মতোই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা ফলাফলেও প্রতিফলিত হয়েছে।
হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি খুবই ভালো হয়েছে বলে কোচ ক্যাবরেরা জানান। “আপনারা জানেন, আমরা প্রায় দশদিনেরও বেশি সময় ধরে কঠোর অনুশীলন করছি। একটি বড় চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি,” তিনি বলেন।
অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও কোচের কথায় সুর মিলিয়ে বলেন, “প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। গত কয়েক দিনে আমরা হংকং দলকে নিয়ে বিশ্লেষণ করেছি। তাদের শক্তি, দুর্বলতা সবকিছু নিয়ে কাজ করেছি।”
হংকং দলে একাধিক ন্যাচারালাইজড ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোচ এ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন। তিনি বলেন, “ন্যাচারালাইজড খেলোয়াড়দের নিয়ে খুব বেশি ভাবার কিছু নেই। আমাদের প্রতিপক্ষ পুরো দল, নির্দিষ্ট কিছু খেলোয়াড় নয়। তাই আমরা হংকং দলকেই প্রস্তুতির কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছি।”
প্রায় তিন বছর ধরে ক্যাবরেরা বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্বে আছেন। সাফে সেমিফাইনাল খেলা ছাড়া দৃশ্যত উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য নেই তার। হংকং ম্যাচের ফলাফলের ওপর বাংলাদেশের এশিয়া কাপ খেলার সম্ভাবনা নির্ভর করছে। স্বাভাবিকভাবেই আগামীকালকের ম্যাচটি তার জন্য বেশ চাপের।
এ প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, “চ্যালেঞ্জিং তো বটেই। শুধু আগামীকালই নয়, এরপর হংকংয়ের অ্যাওয়ে ম্যাচ, আবার এক মাস পর ভারতের সঙ্গে হোম ম্যাচ। এই পুরো সময়টাই গুরুত্বপূর্ণ।”
দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের দলগুলোর বিপক্ষে লড়াই করেও পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে না পারার বিষয়ে কোচ বলেন, “এই মুহূর্তে একটি জয় দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দলকে অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে। আমাদের শুধু লেগে থাকতে হবে, আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে, নিজের পথ থেকে না সরে তবেই ফল আসবে।”
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দুই ম্যাচ শেষে সিঙ্গাপুর ও হংকং উভয়ের পয়েন্ট ৪। ভারত এবং বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ১। আগামীকাল হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ হারলে শীর্ষস্থানের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান দাঁড়াবে ৬। বাকি তিন ম্যাচে এই ৬ পয়েন্টের ব্যবধান কমানো কঠিন হবে। কারণ, চার দলের এই গ্রুপে শুধুমাত্র গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দলই এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পাবে।