অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন যে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পর্যটন শিল্পের সরাসরি ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত নতুন বাংলাদেশে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য নিরসনে পর্যটনের সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো হবে।
আগামীকাল, ২৭ সেপ্টেম্বর, 'বিশ্ব পর্যটন দিবস' উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।
তিনি জানান যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২৫’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। বর্তমানে পর্যটন বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "পর্যটন শিল্পের বিকাশের ফলে একদিকে আমাদের পর্যটন অঞ্চলগুলোর সামগ্রিক উন্নয়ন দ্রুত হচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণেও সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা ঘোষিত দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘Tourism and Sustainable Transformation’ (বাংলা ভাবার্থ: ‘টেকসই উন্নয়নে পর্যটন’) যথার্থ ও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, পর্যটন খাতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সম্ভাবনাময় দেশ। দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, স্থাপত্য নিদর্শন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা, ঐতিহ্যবাহী খাবার এবং আন্তরিক আতিথেয়তা দেশি-বিদেশি যেকোনো পর্যটককে আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পর্যটনের এই অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে।
পর্যটন সম্ভাবনাময় অঞ্চলগুলোর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, স্থানীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদের সঠিক ব্যবহার, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সম্প্রসারণ, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক পরিহার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পর্যটন শিল্পের যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করতে দেশের তরুণ প্রজন্মকে এই শিল্পের উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আশা করেন যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত নতুন বাংলাদেশে পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি পরিবেশগত অবক্ষয় রোধেও সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল অবদান রাখবেন।