পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার তিন জন এবং বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দশ জনসহ মোট ১৩ জন বাংলাদেশি জেলে বর্তমানে ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন। জেলেদের আটকের খবরে তাদের পরিবারগুলোতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
আটককৃত জেলেদের স্বজনরা জানিয়েছেন, তারা পশ্চিমবঙ্গের কাটদ্বীপ জেল হাজতে আছেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে ভারতীয় কোস্টগার্ড একটি ফিশিং ট্রলারসহ তাদের আটক করে।
আটককৃত জেলেদের মধ্যে রয়েছেন: পিরোজপুরের পাড়েরহাট, বাদুরা এলাকার আল-আমিন (সুরাত হাওলাদারের ছেলে), ইন্দুরকানী উপজেলার চারাখালী এলাকার তরিকুল ইসলাম (ফারুক জোমাদ্দারের ছেলে) এবং উমেদপুর এলাকার শাহাদাৎ হোসেন (হেলাল উদ্দিনের ছেলে)।
এছাড়াও, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর এলাকার খোকন মাঝি (আব্দুল মন্নান শেখের ছেলে), খায়রুল বাশার (সিদ্দিক মোল্লার ছেলে), মিরাজ শেখ (সোবাজহান শেখের ছেলে), তরিকুল ডাকুয়া (দেলাওয়ার ডাকুয়ার ছেলে), শহিদুল ইসলাম (সৈয়দ আলীর ছেলে), আকরাম খান (হাশেম খানের ছেলে), ইউসুফ মোল্লা (হানিফ মোল্লার ছেলে), রাজু শেখ (মন্নান শেখের ছেলে), রাকিব সিকদার (বারেক সিকদারের ছেলে) এবং মারুফ বেপারী (শুকুর আলী বেপারীর ছেলে)।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ‘এম.ভি. মায়ের দোয়া’ নামের একটি ট্রলার গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। এটি মালিকানা মালেক বেপারীর। মাছ ধরার সময় ট্রলারটি ১নং চালনার খাড়িবয়া এলাকায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। মেরামতের চেষ্টা ব্যর্থ হলে ট্রলারটি স্রোতের টানে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করে। ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে ভারতীয় কোস্টগার্ড ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গের কাটদ্বীপ জেল হাজতে পাঠায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জেলেরা আটক হওয়ার কয়েক দিন পরেও মৎস্য দপ্তরের কোনো কর্মকর্তা তাদের খোঁজ নিতে আসেননি। নিখোঁজ বা আটক জেলেদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কেও তারা অবগত নন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ট্রলার মালিক মালেক বেপারী বলেন, "আমাদের পিরোজপুরের তিন জনসহ ট্রলারের সকল জেলে বর্তমানে ভারতের কারাগারে আছেন। ভারতীয় সীমানায় প্রবেশের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জেনেছি। জেলে পরিবারগুলো খুবই দুশ্চিন্তায় আছে।"
ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ রহমান বলেন, "আমি বিষয়টি শুনেছি। আমাদের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পর দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
পিরোজপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্নামতও জানান, "পিরোজপুরের কতজন জেলে নিখোঁজ বা আটক রয়েছে, আমরা তার খোঁজখবর নিচ্ছি। তথ্য পেলে বিস্তারিত জানানো হবে।"