জাপানি সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক: শ্রম খাতের অগ্রগতিতে সন্তোষ, তবে আরও উন্নতির তাগিদ
শ্রম খাত বিষয়ক একটি জাপানি সংসদীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কারখানার কর্মপরিবেশের প্রশংসা করলেও এ খাতে আরও অগ্রগতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
জাপানের কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল এবং কাউন্সিলরস হাউসের সদস্য মিচিহিরো ইশিবাশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। তিনি ইপিজেডের অভ্যন্তর ও বাইরের কারখানা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ইশিবাশি বলেন, বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানিগুলো পরিদর্শন করে তারা ইতিবাচক মনোভাব পেয়েছেন, তবে উন্নতির এখনও অনেক সুযোগ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করবে বলে তারা আশাবাদী।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাপানকে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে বহুমাত্রিক বলে অভিহিত করেন।
ড. ইউনূস জানান, শ্রম খাতের সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশনগুলো বাস্তবায়ন ও সময়মতো গ্রহণের জন্য বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশ আত্মসমালোচনামূলক এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৈঠকে ড. ইউনূস মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার প্রকল্পে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন। একই সঙ্গে তিনি জাপানি কোম্পানিগুলোতে বাংলাদেশি টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী নিয়োগের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার ১ লাখ তরুণকে জাপানে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে, যারা ভাষা শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, শিষ্টাচার ও ইতিহাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেবে। তিনি বলেন, এটি কেবল একটি সূচনা, এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক তরুণকে জাপানে পাঠানো হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই উদ্যোগটি তরুণদের সৃজনশীলতা প্রকাশ এবং অন্বেষণের এক অসাধারণ সুযোগ দেবে।
প্রতিনিধি দলে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভাইস সেক্রেটারি জেনারেল হনাকো জিমি, রিউজি সাতোমি, কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য কেনটা ইজুমি, স্বতন্ত্র এমপি মাকিকো দোগোমি, মাকি ইকেদা, মামোরু উমেতানি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল-এর নির্বাহী বোর্ড সদস্য আতসুশি ওশিমা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এ সময় বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।