ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
এই অবরোধের ফলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ২১টি জেলার সড়ক যোগাযোগ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এতে দূরপাল্লার যানবাহন আটকে পড়ে এবং হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগ পোহান।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এই অবরোধ বেলা ১২টার পরও অব্যাহত থাকে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিনে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। এছাড়া, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-খুলনা মহাসড়কের মুনসুরাবাদ বাস স্ট্যান্ড এবং সুয়াদী পাম্প সংলগ্ন এলাকায় সকাল ৮টা থেকেই গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়।
অবরোধের কারণে পদ্মা সেতু পার হয়ে আসা শত শত ট্রাক আটকে পড়ে। ট্রাকচালক আব্দুল খালেক জানান, তারা খুলনা মোংলা বন্দরের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন এবং প্রায় চার থেকে পাঁচশো ট্রাক আটকে আছে।
গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাত্রী অমল কান্তি এবং নিলয় মাহমুদ জানান, তারা সড়কের এমন অবস্থার কথা জানতেন না। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ভ্যানযোগে ও হেঁটে চলাচল করতে বাধ্য হওয়ায় তারা পরিবার নিয়ে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তবে তারা ভাঙ্গাবাসীর দাবির প্রতি সমর্থন জানান।
বিক্ষোভকারীরা জানান, স্থানীয় প্রশাসন গত তিন দিনের মধ্যে তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এই অবরোধ চালিয়ে যাবেন। অবরোধ চলাকালে তারা ‘রক্ত লাগে রক্ত নে, ভাঙ্গাবাসীর মুক্তি দে,’ ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে,’ এবং ‘আমার মাটি আমার মা, নগরকান্দায় দেবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং তারা দুপুর ১২টার পর অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে একটি আইনি প্রক্রিয়া চলমান, তাই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করার জন্য অবরোধকারীদের অনুরোধ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল জানান, হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ের চারটি পয়েন্টে বিক্ষুব্ধরা সড়ক অবরোধ করেছেন। পুলিশ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছে এবং কোনো ধরনের ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবারও একই দাবিতে প্রায় ৯ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। সে সময় স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধকারীরা সড়ক ছেড়েছিলেন। নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর পুনরায় আজ থেকে তারা অবরোধ শুরু করেছেন।