📅 আজকের তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৫ (মঙ্গলবার)

🔴 সর্বশেষ খবর:
ফ্যাসিবাদ বিদায় করলে ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি   |   বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন   |   গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ১২টি সংস্কার   |  
ফেসবুক পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকের উপর হামলা

ফেসবুক পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকের উপর হামলা

ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের মিথ্যা অভিযোগকে কেন্দ্র করে নরসিংদীতে সাংবাদিক আজিজুল হক ও তাঁর পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত ১৮ জুলাই, শুক্রবার। সাংবাদিক আজিজুল হক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি কভার করতে গিয়ে একটি সন্দেহজনক মোবাইল নম্বর থেকে প্রতারণামূলক মেসেজ পান। সেটি যাচাই করতে গিয়ে ভুলক্রমে একটি লিঙ্কে ক্লিক করলে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে যায়।

আনুমানিক রাত ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী লিমা আক্তার ফোনে জানান, “নরসিংদী ট্যুর গ্যাং ট্রাভেল” নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে থাকা এক সদস্যা চুমকী অভিযোগ তুলেছেন, আজিজুল তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। এ অভিযোগের জেরে রাতেই ২৫-৩০ জন যুবক সাংবাদিক আজিজুল হকের বাসায় এসে হামলার প্রস্তুতি নেয়। সাংবাদিক আজিজুল তখন বাসায় না থাকায় সরাসরি সংঘর্ষ এড়ানো গেলেও চুমকীর ভাই পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি ‘আলভী’ জানান, বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা হবে।

তবে গত ২০ জুলাই বিকেলে ওই আশ্বাসের তোয়াক্কা না করে পুনরায় ৩০-৩৫ জন যুবক সাংবাদিক আজিজুলের বাসায় চড়াও হয়। অভিযোগ রয়েছে, তারা প্রথমে শান্তিপূর্ণ আলোচনার ছল করে বাসায় প্রবেশ করে এবং পরে সাংবাদিক আজিজুলকে চাপ দেয় আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য ‘ক্ষমা চাইতে’। এক পর্যায়ে মোস্তাফিজ নামের এক যুবক সাংবাদিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে এবং তা না পেয়ে ইফাদ নামের এক যুবক আজিজুল হকের ওপর প্রথম আঘাত করে। এরপরই সংঘবদ্ধভাবে শুরু হয় বেপরোয়া মারধর, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট।

সাংবাদিক আজিজুল জানান, হামলার সময় তাঁর স্ত্রী লিমা আক্তার বাধা দিতে গেলে তাকেও নির্মমভাবে মারধর করা হয়। বৃদ্ধা মা ও দেড় বছরের শিশুকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। শিশুটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে, যার প্রভাব এখনও দৃশ্যমান।

আজিজুল আরও জানান, হামলাকারীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেছে— “৫ লাখ টাকা দিয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে তোকে গুম করে ফেলবো”। হামলার সময়কার ভিডিও ফুটেজে ভাঙচুর ও হামলার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

ঘটনার পরপরই আহত আজিজুল হক চিকিৎসা নিয়ে তাঁর স্ত্রী লিমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি এই ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আমার স্বামী একজন পেশাদার সাংবাদিক। ফেসবুক আইডি হ্যাক করে এমন চক্রান্ত যারা করেছে, তারা শুধু ব্যক্তি নয়— পরিবার ও পেশাকে অপমান করেছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও নাগরিকরা একে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সন্ত্রাসী হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।